ব্যাংকে চাকুরি করতে চান? ব্যাংকে চাকুরি কি হারাম নাকি হালাল জানা নেই? আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে সঠিক তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে ব্যাংকে চাকুরি কি হালাল নাকি হারাম সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।

আমাদের দেশের সহ বিশ্বের অনেক দেশেই ব্যাংক রয়েছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এখন সুদ জিনিসটি ঢুকে গেছে। তাই, অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন থাকে যে, ব্যাংকে চাকুরি করা হারাম নাকি হালাল? তো চলুন, এই বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত তর্জমা করা যাক।

ব্যাংকে চাকরি কি হারাম

ব্যাংকে চাকরি কি হারাম
ব্যাংকে চাকরি কি হারাম

ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সুদ ঢুকে গেছে। তাই, যেসব ব্যাংকে সুদের কারবার চলে, সেসব ব্যাংকে চাকরি করা হারাম। তবে, ইসলামি ব্যাংকগুলোতে সুদের কারবার অনেকাংশে কম বা নেই বললেই চলে। এসব ইসলামি ব্যাংকে চাকরি করা যেতে পারে।

ব্যাংকে চাকুরি করা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ, ব্যাংকে সুদের কারবার পরিচালিত হয়ে থাকে। আর সুদ ইসলাম ধর্মে একদম নিষিদ্ধ। এ প্রসঙ্গে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সুদের ৭০ প্রকার গুনাহ রয়েছে। সবথেকে নিম্নটি হলো নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সমপর্যায়ের গুনাহ।’ (মুসতাদরেকে হাকেম, আন-নিহায়া ফি গারিবিল হাদিস)।

অতএব, বুঝতেই পারছেন সুদ দেয়া-নেয়া, এবং সুদের কারবারের সাথে যুক্ত থাকার গুনাহ কী পরিমাণ ভয়াবহ। তাই, ব্যাংকে চাকুরি করা হারাম বলা চলে। তবে, একদম উপায় না থাকলে ইসলামি ব্যাংকে চাকুরি করা যেতে পারে। এসব ব্যাংকে সাধারণত সুদি কারবার চলে না।

আরও পড়ুন - বিকাশ একাউন্ট কার নামে আছে কিভাবে জানবো

ব্যাংকের চাকরি হারাম কেন

ব্যাংকগুলোর মূল ইনকামের জায়গাই হচ্ছে সুদ। সুদের কারবার পরিচালনা করেই তারা ব্যাংক পরিচালনা করে থাকে। সুদ যেহেতু ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ, তাই ব্যাংকে চাকুরি করাও নিষিদ্ধ বা হারাম কাজ। কারণ, ব্যাংকে চাকুরি করলে সুদের কারবারের সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে। আর এই সুদ দেয়া কিংবা নেয়া অথবা সুদের কারবারের সাথে কোনভাবে সংযুক্ত থাকাই হারাম কাজ।

ব্যাংকে চাকরি কি হালাল

হ্যাঁ, ব্যাংকে চাকরি করা হালাল। তবে, এটি হতে হবে ইসলামি ব্যাংক। ইসলামি ব্যাংক সুদের কারবার থেকে সরে এসে ইসলাম ভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ার চেষ্টা করছে। তারা মূলত মানুষের জমানো টাকা সুদের কারবারে বিনিয়োগ না করে সেগুলো হালাল খাতে বা ব্যবসায় খাতে বিনিয়োগ করছে। এরপর, সেগুলো থেকে মুনাফা নিয়ে তা গ্রাহকদের মাঝে বণ্টন করছে।

আরও পড়ুন - সহজে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম

তাই, আপনি যদি একান্তই ব্যাংকে চাকুরি করতে চান, তবে ইসলামি ব্যাংকে চাকুরি করা হালাল হিসেবে গন্য হবে। তবে, যে ব্যাংকে চাকুরি করতে যাবেন, সেই ব্যাংকটি আসলেই ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী ব্যাংকিং সেবা পরিচালনা করছে নাকি শুধু নামে ইসলামি ব্যাংক সেটি অবশ্যই যাচাই করে নিবেন।

ব্যাংকে চাকরি কি হারাম নাকি হালাল প্রসঙ্গে স্কলারদের অভিমত

ব্যাংকে চাকরি কি হারাম নাকি হালাল এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় বক্তা এবং ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারি সবাইকে ইসলামিক ব্যাংকে চাকুরি বা লেনদেন করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। ইসলামি ব্যাংকে যেহেতু সুদের কারবার চলে না, তাই ইসলামি ব্যাংকগুলোতে চাকুরি করা কিংবা টাকা জমানো হারাম হবে না।

ব্যাংকের চাকরি হালাল নাকি হারাম এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে নিম্নে সংযুক্ত মিজানুর রহমান আজহারির ভিডিওটি দেখতে পারেন।

ডক্টর জাকির নায়েককে চিনেন অবশ্যই। তিনিও ইসলামের একজন বড় স্কলার। ব্যাংকে চাকুরি করার ব্যাপারে তিনিও ইসলামি ব্যাংকে চাকুরি করার কথা বলেছেন। আরও বিস্তারিত জানতে নিম্নে সংযুক্ত তার ভিডিওটি দেখতে পারেন।

পূর্বেও আমি বলেছি যে, অনেক ব্যাংক আছে যা শুধু নামেই ইসলামিক ব্যাংক। কিন্তু, তারা আসলে ইসলামিক শরিয়া অনুয়ায়ি ব্যাংকিং কাজ পরিচালনা করেন না। তাই, লোন নেয়া বা অন্য যেকোনো লেনদেন করার জন্য অবশ্যই ব্যাংকিং ব্যবস্থা যাচাই করতে হবে।

অনেক ব্যাংক মুখে বলে যে ইসলামিক। আপনি যদি যাচাই করে দেখার পরেও দেখেন যে এটি আসলেই ইসলামিক। তবে, লেনদেন বা চাকরি করতে পারেন। তারা আপনার অগোচরে হারাম কাজ করলে সেটির দায়ভার আপনার উপর বর্তাবে না। কিন্তু, আপনি যদি জানার পরেও সুদের কারবারের সাথে যুক্ত হন, তবে এর দায়ভার আপনাকেই বহন করতে হবে। আশা করছি, ব্যাংকে চাকরি কি হারাম নাকি হালাল বুঝতে পেরেছেন।

ব্যাংক জব হারাম নাকি হালাল বিষয়ক কিছু প্রশ্নোত্তর

বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি কি হারাম?

বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করা হারাম। কারণ, এটি ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালনা করে না। ইসলামি শরিয়া ছাড়া যে ব্যাংক সুদের কারবার নিয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালনা করে, সেই ব্যাংকে চাকুরি করা হারাম, হারাম, হারাম।

ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করা কি হালাল?

ইসলামি ব্যাংকে চাকরি করা হালাল হবে যদি উক্ত ব্যাংক আসলেই ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালনা করে থাকে। লেনদেন বা চাকরি করার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে। তবে, এমন ব্যাংক এর পরিমাণ অনেক কম।

সরকারি ব্যাংকে চাকরি কি হালাল?

ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী পরিচালিত হয়, সুদের কারবার চলে না, এমন ব্যাংক ছাড়া সব ধরণের ব্যাংকে চাকরি করা হারাম। সরকারী ব্যাংকেও সুদের কারবার চলে, তাই এই ব্যাংকেও চাকুরি করা হারাম।

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে ব্যাংকে চাকরি করা কি হালাল নাকি হারাম এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। পোস্টে ইসলামি শরিয়া এবং জনপ্রিয় ২জন স্কলার এর মতামত সহ আমার মতামত প্রকাশ করেছি। আপনি যদি ব্যাংকে চাকরি করতে চান এবং হারামে জড়িত হওয়া থেক বিরত থাকতে চান, তবে ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী পরিচালিত হয় এমন ব্যাংকে চাকরি করতে হবে।

পোস্ট সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। এমন আরও তথ্য জানতে নিচের পোস্টগুলো পড়তে পারেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *