যেসব জমি ব্যক্তি বা কোনো সংস্থা মালিকানাধীন থাকে না, সেসব জমিকেই খাস জমা বলা হয়। খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম জানতে পারবেন এই পোস্টে।

আমাদের দেশে অনেক খাস জমি আছে যেগুলোর কোনো ব্যক্তি মালিকানা নেই বা কোনো সংস্থা মালিকানা নেই। আপনি চাইলে এসব খাস জমি বন্দোবস্ত করার আবেদন করে সহজেই এই জমিগুলো আপনার নামে রেকর্ড করে নিতে পারেন।

খাস জমি কিভাবে রেকর্ড করতে হয় এবং খাস জমি বন্দোবস্ত করার জন্য যা যা জানা প্রয়োজন তা নিম্নরূপ।

খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম

খাস জমি রেকর্ড করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এর নিকট আবেদন করতে হবে। তাহলে, ৯৯ বছরের জন্য কৃষি বা অকৃষি খাস জমি লিজ নিতে পারবেন। লিজ নেয়া হলে ভূমি অফিসের ওয়েবসাইট কিংবা এসিল্যান্ড গিয়ে নামজারি খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

খাস জমি রেকর্ড করার জন্য জেলা প্রশাসক এর নিকট আবেদন করে আবেদন অনুমোদিত হলে ভূমি অফিসের ওয়েবসাইট https://mutation.land.gov.bd ভিজিট করে কিংবা এসি ল্যান্ড অফিস গিয়ে নামজারি খতিয়ানের আবেদন করতে হবে। এজন্য, ২০ টাকা কোর্ট ফি, প্রসেস জারি ফি ৫০ টাকা, ডিসিয়ার কাটার জন্য ১১০০ টাকা সহ মোট ১১৭০ টাকা খরচ করতে হয়।

এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে সহজেই খাস জমি আপনার নামে রেকর্ড করে নিতে পারবেন। খাস জমি লিজ নেয়ার পর ৯৯ বছর সেটি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে, খাস জমি নিতে চাইলে অবশ্যই কিছু শর্ত মানতে হবে।

খাস জমি বন্দোবস্ত করার শর্ত

খাস জমি বন্দোবস্ত করার আবেদন করতে চাইলে আপনাকে ভূমিহীন হতে হবে কিংবা ১০ শতকের কম জমি থাকতে হবে। ১০ শতকের বেশি জমি থাকলে খাস জমি বন্দোবস্ত করার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কৃষি বা অকৃষি দুই ধরনের খাস জমিই রেকর্ড করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যেসব জমি কোনো ব্যক্তির নাম কিংবা সরকারি সংস্থার নামে রেকর্ড করা নেই, এসব জমি প্রতিটি মৌজার ০১ নং খতিয়ানের উল্লেখ করা থাকে। এসব জমি সাধারণত জেলা প্রশাসক এর নামে রেকর্ড করা থাকে। আপনি যদি ভূমিহীন হয়ে থাকেন কিংবা ১০ শতের কম পরিমাণ জমি থাকে, তাহলে খাস জমি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত করার আবেদন করতে পারবেন।

বন্দোবস্তের আবেদন করার পর আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে নামজারি খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে হবে। অনলাইনে কিংবা সরাসরি এসি ল্যান্ড অফিস গিয়ে নামজারি আবেদন করতে পারবেন। অতঃপর, বাকী কাজ ভূমি অফিস করবে। নামজারি করার জন্য নামজারি ফি জমা দিতে হবে।

নামজারি হয়ে গেলে নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন আপনার নামে রেকর্ড হয়েছে কিনা। আপনি উক্ত খাস জমিটি বন্দোবস্ত করতে পারবেন ৯৯ বছরের জন্য।

খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার আবেদন ফরম

খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য একটি আবেদন ফরম পূরণ করে জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিতে হয়। খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার আবেদন ফরম ডাউনলোড করে এটি প্রিন্ট করে সকল সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।

এরপর, আবেদন ফরমটি জমা দিতে হবে জেলা প্রশাসকের নিকট। অতঃপর, আবেদন অনুমোদিত হলে নামজারি করার জন্য আবেদন করতে হবে।

খাস জমি লিজ নেওয়ার আবেদন ফরম

সরকারি খাস জমি লিজ নেয়া যায় ৯৯ বছরের জন্য। খাস জমি লিজ নেওয়ার আবেদন ফরম ডাউনলোড করার পর এই ফরমটি প্রিন্ট করে নিতে হবে। এরপর, আবেদন ফরমটি জমা দিতে হবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। অতঃপর, আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলে আপনি ৯৯ বছরের জন্য সরকারি একটি জমি লিজ নিতে পারবেন।

এরপর, চাইলে উক্ত জমিটি আবারও লিজ রিনিউ করে নিতে পারবেন। খাস জমি লিজ নেওয়ার আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে পারবেন এখানে ক্লিক করে

খাস জমির মালিক কে?

বাংলাদেশের প্রতিটি খাস জমির মালিক বাংলাদেশ সরকার। খাস জমিগুলো সাধারণত জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকে। যে কেউ চাইলে এসব সরকারি খাস জমি লিজ নিতে পারবে। লিজ নেয়ার পর খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম অনুসরণ করে নামজারি করে নিলে ৯৯ বছর এসব জমি বন্দোবস্ত করতে পারবে।

এছাড়াও, আমাদের ওয়েবসাইটে বি এস খতিয়ান অনুসন্ধান, এস এ খতিয়ান অনুসন্ধান, বি আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার পদ্ধতি নিয়েও বিস্তারিত তথ্য পাবেন।

শেষ কথা

এই পোস্টে আপনাদের সাথে খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করেছি। সম্পূর্ণ পড়লে কীভাবে খাস জমি নিজের নাম রেকর্ড করতে হয় জানতে পারবেন। সরকারি খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম সম্পর্কিত এই পোস্ট নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন কমেন্ট বক্সে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 Comments

  1. ১।খাস জমি বিক্রয় যাবে কি না?
    ২।আমি প্রায় ৩০বছর ধরে বসত বাড়ি সহ দখলে আছি কিন্তু এর পূর্বে কোন এক ব্যাক্তি বন্দোবস্ত করেছে,ঐ জমি আমার নামিয় করতে করণীয় কি?

    1. ১/ খাস জমি বিক্রয় করতে পারবেন না। কারণ এটি সরকারের সম্পত্তি।

      ২/ জমিটি আপনার নামে করতে চাইলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করতে হবে।