ইসলামি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন কিন্তু ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে এবং ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে জানেন না? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাইলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র লাগবে যা একাউন্ট খুলার আবেদন করার সময় প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়াও, একাউন্ট খোলার সময় ব্লক মানি এবং ফি নেয়া হয়ে থাকে। যারা নতুন একাউন্ট খুলতে চান কিন্তু জানেন না কত টাকা এবং কি কি কাগজপত্র লাগে তারা এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

তো চলুন, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে এবং কী কী কাগজপত্র লাগে তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া যাক।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট খোলার সময় ৫০০ টাকা, সেভিংস একাউন্ট খোলার সময় ১,০০০ টাকা এবং স্টুডেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা প্রাথমিক জমা দিতে হয়। এছাড়া, একাউন্টের ধরনের উপর নির্ভর করে মাসিক ফি, এটিএম কার্ড ফি এবং চেকবুক ফি নির্ভর করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক কারেন্ট একাউন্টের মাসিক ফি ৫০ টাকা, সেভিংস একাউন্টের ২০ টাকা এবং স্টুডেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে ফ্রি। কারেন্ট একাউন্ট এবং সেভিংস একাউন্টের এটিএম কার্ড ফি ১০০ টাকা এবং স্টুডেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত এটিএম কার্ড এবং অন্যান্য ফি ফ্রি।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সময় একাউন্টের ধরণ অনুযায়ী প্রাথমিক জমার পরিমাণ কমবেশি হয়ে থাকে। এছাড়া, মাসিক ফি প্রতি মাসে কেটে নিতে পারে কিংবা প্রতি বছরের ফি একবারে কেটে নিতে পারে। একাউন্টের ধরনের উপর নির্ভর করে এটিএম কার্ডের চার্জ নির্ধারিত হয়ে থাকে। নিচে আরও বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের ধরণ অনুযায়ী চার্জ তালিকা

অ্যাকাউন্টের ধরণপ্রাথমিক জমাবাৎসরিক ফিএটিএম কার্ডচেকবুক
স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট১০০ টাকা০ টাকা (৩০ বছর অব্দি)০ টাকা (৩০ বছর অব্দি)০ টাকা (৩০ বছর অব্দি)
কারেন্ট অ্যাকাউন্ট৫০০ টাকা৬০০ টাকা১০০ টাকা৫০ টাকা
সেভিংস অ্যাকাউন্ট১,০০০ টাকা২৪০ টাকা১০০ টাকা৫০ টাকা
ইসলামিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট১,০০০ টাকা২৪০ টাকা১০০ টাকা৫০ টাকা
সুপার সেভিংস অ্যাকাউন্ট (SSB)১০,০০০ টাকা৬০০ টাকা১০০ টাকা৫০ টাকা
ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট (FDR)৫০,০০০ টাকাপরিমাণের উপর১০০ টাকা
Islami Bank Account Opning and Yearly Charge

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সময় প্রাথমিক জমা দিতে হয় যা ব্লক মানি হিসেবে থাকে। উক্ত টাকা অ্যাকাউন্ট ক্লোজ করার সময় পাওয়া যাবে। এছাড়া, বাৎসরিক ফি এবং অন্যান্য ফি লাগতে পারে যার পরিমাণ উপরের টেবিলে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এর উপর নির্ভর করে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে তা নির্ভর করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের বিভিন্ন লেনদেন এর চার্জ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করে ইসলামী ব্যাংকের চার্জ সম্পর্কিত পিডিএফ ফাইলটি পড়তে পারেন কিংবা ডাউনলোড করতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

ইসলামী ব্যাংকে বিভিন্ন ধরণের একাউন্ট খোলা যায়। একাউন্টের ধরনের উপর নির্ভর করে আলাদা আলাদা কাগজপত্র লেগে থাকে। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজপত্র লাগে তার তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

  • একাউন্ট ওপেনিং ফর্ম
  • ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে ইউটিলিটি বিলের কপি
  • পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
  • ইনকাম সোর্স এর ডকুমেন্ট
  • নমিনির ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • নমিনির পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি
  • একাউন্টের প্রাথমিক জমার পরিমাণ টাকা

উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো দ্বারা ইসলামী ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে চাইলে ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে খুলতে পারবেন অথবা ভোটার আইডি কার্ড না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়েও একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্টের ধরনের উপর নিভর করে প্রাথমিক জমার পরিমাণ নির্ভর করে থাকে। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে তা ইতোমধ্যে উপরে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। আপনি কোন ধরনের একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন তা দেখে কত টাকা প্রাথমিক জমা দিতে হবে সেটি দেখে নিতে পারেন।

FAQ

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার কি কি?

ইসলামী ব্যাংকে ৬ ধরনের একাউন্ট রয়েছে। স্টুডেন্ট মুদারাবা একাউন্ট, কারেন্ট একাউন্ট, সেভিংস একাউন্ট, ইসলামিক সেভিংস একাউন্ট, সুপার সেভিংস একাউন্ট এবং ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট। আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে এই ৬ ধরনের একাউন্টের যেকোনো একটি খুলতে পারবেন অনেক সহজেই।

ইসলামী ব্যাংকে সর্বনিম্ন কত টাকা রাখা যায়?

ইসলামী ব্যাংকে সর্বনিম্ন কত টাকা রাখা যাবে তা নির্ভর করবে আপনার একাউন্টের ধরনের উপর। স্টুডেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকে ১০০ টাকা রাখা যায়, কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা এবং সেভিংস একাউন্টের ক্ষেত্রে ১,০০০ টাকা রাখা যায়। এই টাকাগুলো ব্লক মানি হিসেবে জমা থাকে যা একাউন্ট ক্লোজ করলে পাওয়া যায়।

ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট করতে হলে কি কি লাগে?

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট করতে হলে ন্যুনতম জমার পরিমাণ টাকা, ভোটার আইডি কার্ডের কপি, ইনকাম সোর্স এর ডকুমেন্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, নমিনির ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডের কপি, ইউটিলিটি বিলের কপি ইত্যাদি ডকুমেন্ট লেগে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার কত ডিজিটের?

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ১৭ ডিজিটের হয়ে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক নতুন নাম কি?

ইসলামী ব্যাংক এর নতুন নাম “ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড” থেকে পরিবর্তন করে “ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি” করা হয়েছে।

সারকথা

ইসলামী ব্যাংক একাউণ্ট খুলতে কি কি লাগে এবং ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে তা এই পোস্টে বিস্তারিত শেয়ার করেছি। ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইলে পোস্টটি আপনার জন্য সহায়ক হবে বলে আশা করছি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *