নতুন ভোটার কিংবা পুরাতন ভোটার, সবারই আইডি কার্ড বের করার নিয়ম জানা আবশ্যক। কারণ, আমাদের কাছে যদি লেমিনেটিং করা আইডি কার্ড না থাকে, তবে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। এনআইডি চেক ওয়েবসাইটের আজকের এই পোস্টে আপনাদের ফরম নম্বর দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার পর আমাদেরকে একটি স্লিপ দেয়। এই স্লিপে একটি নাম্বার দেয়া থাকে। ভোটার আবেদন করার পর ছবি তোলা সম্পন্ন হলে কয়েক মাস পর, উক্ত স্লিপ নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা যায়। স্লিপ নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম জানতে হলে পোস্টটি বিস্তারিত পড়ুন।
আইডি কার্ড বের করার নিয়ম
আইডি কার্ড বের করার জন্য services.nidw.gov.bd ওয়েবাসাইট ভিজিট করতে হবে। এরপর, NIDFNটোকেন নাম্বার কিংবা NID নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দেয়ার পর ক্যাপচা পূরণ করে একাউন্ট রেজিস্টার করতে হয়। অতঃপর, ঠিকানা নির্বাচন করে দিয়ে ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে আইডি কার্ড বের করে নেয়া যায়।
ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার পর ছবি তুলতে হয়। ছবি তুলার ১ মাসের মাঝেই আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে এনআইডি কার্ড হাতে না পেলেও আমরা অনলাইনে আইডি কার্ড বের করে প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে নিতে পারি।
অনলাইনে আইডি কার্ড বের করার কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। এগুলো হচ্ছে –
- ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা
- স্লিপ নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা
- টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করা
- মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করা
- NID নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা
আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে উপরোক্ত সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত পদ্ধতি আলোচনা করবো। এতে করে, কিভাবে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র বের করতে হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং আপনি যদি একজন নতুন ভোটার হয়ে থাকেন, তবে আপনার এনআইডি কার্ডের অনলাইনে কপি বের করতে পারবেন।
টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম
ভোটার আবেদন করার পর আপনাকে যে টোকেন বা ফরম নাম্বার দেয়া হয়েছে, সেখানে থাকা স্লিপ নাম্বার দিয়ে আমরা অনলাইনে আইডি কার্ড বের করতে পারি। অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুন।
ধাপ ১ – বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে একাউন্ট তৈরি করা
- প্রথমেই https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইট ভিজিট করে রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করবেন।
- এরপর, অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর / ফর্ম নম্বর দিবেন। ফর্ম নাম্বার দিলে ফর্ম নাম্বারের সামনে NIDFN লিখে এরপর ফর্ম নাম্বার দিবেন। যেমন – NIDFN143757986
- অতঃপর, আপনার আবেদন ফরম অনুযায়ী জন্ম তারিখ দিবেন। জন্ম তারিখ এবং মাস যদি ১-৯ হয়, তবে সামনে অবশ্যই শুন্য দিবেন।
- এরপর, ছবিতে দেখানো ক্যাপচা কোড পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করবেন।
আপনি যদি নতুন ভোটার হওয়ার জন্য ছবি তুলে থাকেন এবং এক মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গিয়ে থাকে, তবে উপরে উল্লিখিত সকল পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করলে আপনার থেকে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা চাইবে।
আরও পড়ুন — NID Card Check
বর্তমান ঠিকানা থেকে বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা নির্বাচন করে দিন। একইভাবে, স্থায়ী ঠিকানা থেকে বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা নির্বাচন করে দিন। অতঃপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করবেন।
পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার পর, ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন ফর্মে দেয়া নাম্বার শো করবে। উক্ত নাম্বারটি যদি আপনার কাছে থাকে, তবে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করবেন। যদি না থাকে, তবে মোবাইল পরিবর্তন বাটনে ক্লিক করে নাম্বার পরিবর্তন করে নিবেন।
বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করার পর আপনার নাম্বারে একটি টেক্সট ম্যাসেজ আসবে। সেখানে একটি ৬ ডিজিটের ওটিপি থাকবে। সেটি নিচের ইমেজের মতো বক্সে দিয়ে বহাল বাটনে ক্লিক করবেন। (উক্ত ম্যাসেজে আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বারও থাকবে। ^_~ )
ওটিপি কোড সঠিকভাবে দেয়ার পর বহাল বাটনে ক্লিক করলে নিচের ইমেজের মতো একটি পেজ ওপেন হবে। সেখানে, একটি QR CODE থাকবে। এখন আপনাকে NID WALLET অ্যাপ ইন্সটল করে বাকী কাজ সম্পন্ন করতে হবে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
ধাপ ২ – NID WALLET অ্যাপ ইন্সটল
অন্য একটি মোবাইল থেকে প্লে স্টোর ওপেন করে NID WALLET লিখে সার্চ দিলে একটি অ্যাপ পাবেন। সেটি ইন্সটল করে নিবেন। আপাতত, এই অ্যাপটি শুধুমাত্র আন্ড্রয়েড ফোনের জন্যই রয়েছে। পরবর্তীতে আইওস ডিভাইসের জন্য আসবে।
ধাপ ৩ – ফেস ভেরিফিকেশন
NID WALLET অ্যাপটি ইন্সটল হয়ে গেলে ওপেন করে নিন। এরপর, আপনার থেকে ক্যামেরা পারমিশন চাইবে। ক্যামেরা পারমিশন দিবেন। অতঃপর, ধাপ ১ এ শেষের দিকে আমরা যে QR কোডটি পেয়েছিলাম। সেটি স্ক্যান করে নিন।
এরপর, আপনার ফেস স্ক্যান করতে হবে। Start Face Scan বাটনে ক্লিক করে ক্যামেরার সামনে আপনার ফেস ডান দিকে এবং বাম দিকে ঘুরাবেন। হয়ে গেলে OK বাটনে ক্লিক করবেন।
ফেস স্ক্যান সম্পন্ন হলে যে ব্রাউজারে QR কোড ছিলো, সেখানে অটোমেটিক আপনার একাউন্টে লগইন হয়ে যাবে। এরপর, আপনাকে পাসওয়ার্ড সেট করতে বলবে। আপনি চাইলে এড়িয়ে যান বাটনে ক্লিক করতে পারেন। তাহলে আপনার একাউন্টে লগইন হয়ে যাবে।
সেট পাসওয়ার্ড বাটনে ক্লিক করার পর একটি ইউনিক ইউজারনেম দিবেন এবং পরপর দুইবার একই পাসওয়ার্ড দিবেন, পাসওয়ার্ড বক্সে। অতঃপর, আপডেট বাটনে ক্লিক করবেন।
পাসওয়ার্ড এবং ইউজারনেম দিয়ে আপডেট করার পর আপনার প্রোফাইলে লগইন হয়ে যাবে। এখানে থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন। এজন্য নিচে দেয়া ইমেজের মতো করে উক্ত বাটনে ক্লিক করলে আপনার আইডি কার্ড সেভ হয়ে যাবে। এরপর, সেটি দিয়ে আইডি কার্ড লেমিনেটিং করে নিতে পারবেন।
এই ছিলো অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম। আশা করছি, উপরে উল্লিখিত সকল পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে এতোদূর অব্দি এসে থাকলে, আইডি কার্ড বের করার নিয়ম সম্পর্কে আপনি অবগত হয়ে গেছেন।
এখন চাইলে টোকেন নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করতে পারবেন অনেক সহজেই। কিংবা, আপনি চাইলে আপনার NID নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করতে পারেন। পদ্ধতি একই, শুধুমাত্র টোকেন নাম্বার এর জায়গায় আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার দিতে হবে।
টোকেন নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম অনুসরণ করে থাকলে একটি বিষয় ভুলবেন না। টোকেন নাম্বার লেখার আগে NIDFN অবশ্যই লিখবেন। নয়তো, একাউন্টে রেজিস্টার করতে পারবেন না। অনেক ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়া নেই। এজন্য অনেকেই ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করতে পারেন না।