ফিজি কাজের ভিসা নিতে চাইলে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করতে হবে। এরপর, ওয়ার্ক পারমিট সহ গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট দিয়ে ভিসা আবেদন করে ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে পারবেন এবং কাজের ভিসায় ফিজি যেতে পারবেন।
কীভাবে ফিজি ওয়ার্ক পারমিট নিতে হয় এবং ফিজি কাজের ভিসায় আবেদন করার পদ্ধতি নিয়ে আজকের এই ব্লগে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। প্রবাস জীবন হিসেবে ফিজি বেঁছে নিতে চাইলে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়ুন।
তো চলুন, ফিজি কাজের ভিসা ২০২৪ নিয়ে আরও বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
এক নজরে পোস্টের বিষয়বস্তু
ফিজি কাজের ভিসা
ফিজি ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে ভিসা প্রসেসিং ফি, পাসপোর্ট ফি, ফ্লাইট টিকেট সহ মোট ২ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ টাকার মাঝে ফিজি যেতে পারবেন। ফিজি কাজের ভিসায় গিয়ে কৃষিকাজ, ওয়েল্ডিং কাজ, ইলেক্ট্রনিক্স কাজ, ক্লিনিং এবং ড্রাইভিং সহ আরও অনেক কাজ করতে পারবেন।
তবে, আপনি যদি নিজে থেকে ফিজি কাজের ভিসার জন্য আবেদন করে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করেন এবং ভিসা আবেদন করেন, তবে মাত্র ২-৪ লক্ষ টাকার মাঝেই ফিজি যেতে পারবেন। তবে, কোনো ভিসা এজেন্সি বা দালালের সহযোগিতা নিলে ফিজি যেতে ৫-৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে।
ফিজি কাজের ভিসা কত টাকা, ফিজি যেতে কি কি লাগে এবং ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নেয়ার পদ্ধতি নিয়ে আরও বিস্তারিত নিচে জানতে পারবেন।
আরও পড়ুন — জাপান যেতে কত টাকা লাগে
ফিজি ভিসা করতে কি কি লাগবে
ফিজি ভিসা করতে পাসপোর্ট, ওয়ার্ক পারমিট সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট লাগে। নিচে এসব ডকুমেন্ট তালিকা আকারে উল্লেক করে দিয়েছি। চলুন, জেনে নেয়া যাক।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি
- বৈধ পাসপোর্ট ৬ মাস মেয়াদসহ
- ফিজি ওয়ার্ক পারমিট এর কপি
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপি
- নিয়োগকর্তা থেকে পাওয়া আমন্ত্রনপত্র
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
- পড়ালেখার সনদ পত্র
- মেডিকেল রিপোর্ট চেক করার সার্টিফিকেট
উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো দিয়ে ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন সম্পন্ন হলে ভিসা তৈরি হতে কিছু সময় লাগবে। এরপর, ভিসা প্রসেসিং শেষ হলে আপনি ফিজি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ফিজি যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন – পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সৌদি ভিসা চেক
ফিজি কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম
ফিজি কাজ করার জন্য যেতে চাইলে প্রথমেই ফিজি ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করতে হবে। এরপর, প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সহ ভিসা প্রসেসিং ফি ফিজি কনস্যুলেটে জমা দিতে হবে। এরপর, ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ফিজি যেতে পারবেন।
ফিজি কৃষি ভিসা, গার্মেন্টস ভিসা সহ আরও অনেক ধরনের ভিসা দিয়ে থাকে। এসব ভিসা আবেদন করার নিয়ম নিয়ে নিচে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ধাপ ১ – ফিজি ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ
ফিজি কাজের জন্য যেতে চাইলে একটি ওয়ার্ক পারমিট লাগবেই। ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করার জন্য আপনি যে কোম্পানিতে কাজ করতে চান, সেই কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করুন। তারা আপনার ফিজি ওয়ার্ক পারমিট এর ব্যবস্থা করে দিবে।
ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে গেলে পরবর্তী ধাপ অনুসরণ করুন। তবে, ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করতে না পারলে কোনো ভিসা এজেন্সির সহযোগিতা নিন।
ধাপ ২ – ফিজি কনস্যুলেটে যোগাযোগ
ফিজি কনস্যুলেটে যোগাযোগ করে একটি ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। এরপর, এই ভিসা আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হবে সকল তথ্য দিয়ে।
এছাড়াও, ফিজি কনস্যুলেটে যোগাযোগ করলে তারা আপনাকে ফিজি কাজের ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারবে। কোন ভিসায় কতজন কর্মী নিয়োগ দিবে সেটিও জানতে পারবেন তাদের থেকে।
আরও পড়ুন – মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার উপায়
ধাপ ৩ – প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিন
ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ফরম পূরণ করার পর সঙ্গে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। পাসপোর্ট, সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, মেডিকেল রিপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট সহ পড়ালেখার সনদপত্র।
এসকল ডকুমেন্ট জমা দেয়ার পর ভিসা প্রসেসিং হতে অপেক্ষা করতে হবে। ভিসা প্রসেসিং হওয়ার জন্য ভিসা প্রসেসিং ফি এবং আনুসাঙ্গিক ফি জমা দিতে হবে।
ধাপ ৪ – ভিসা প্রসেসিং
ভিসা প্রসেসিং ফি সহ আনুসাঙ্গিক সকল ফি জমা দিলে ভিসা প্রসেসিং হতে ৭ দিন থেকে ১ মাস পর্যন্ত সময় লেগে থাকে। তবে, ভিসা সার্কুলার প্রকাশিত হলে এই সময় আরও বেশি লাগতে পারে।
তাই, সময় নিয়ে অপেক্ষা করুন। আপনার ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি হয়ে গেলে মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
উপরোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে ফিজি ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ এবং ভিসা আবেদন করতে পারবেন। ভিসা হয়ে গেলে প্লেনের টিকেট কেটে ফিজি গিয়ে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
ফিজি কাজের ভিসার খরচ কত টাকা
ফিজি কাজের ভিসা করতে ২-৪ লক্ষ টাকা লেগে থাকে। এজন্য আপনাকে নিজে থেকেই ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন এবং ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। তবে, কোনো এজেন্সি বা দালালের সহযোগিতা নিলে ৫-৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে।
ফিজি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যেতে চাইলে নিজে থেকেই অনলাইনে ফিজি কাজের ভিসার আবেদন করুন। নয়তো কোনো ফিজি ভিসা এজেন্সির সহযোগিতা নিতে পারেন। তবে, এজন্য কাজের ভিসা করতে ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে।
ফিজি ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ, ভিসা প্রসেসিং ফি, প্লেনের টিকেট, পাসপোর্ট সহ আনুসাঙ্গিক সকল খরচ মিলিয়ে ফিজি কাজের ভিসার জন্য ৪ লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে। মাত্র ২-৪ লক্ষ টাকা হলেই ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন – কুয়েত ভিসা চেক করার নিয়ম
ফিজিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
ফিজিতে বেশ কিছু কাজের চাহিদা বেশি, বিশেষ করে নির্মাণ, পর্যটন এবং কৃষি খাতে। নির্মাণ শ্রমিক, পোশাক শ্রমিক, পর্যটন কর্মী, কৃষি শ্রমিক, আইটি কর্মী ইত্যাদি কাজের ভিসা নিয়ে ফিজি গিয়ে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ফিজিতে যে কাজই করুন না কেন, বেশি বেতন পেতে চাইলে আপনাকে উক্ত কাজে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হতে হবে। যদি কোনো কাজে দক্ষ হতে পারেন, তবে ফিজি গিয়ে সেই কাজ করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
তাই, আপনি যে কাজে বেশি দক্ষ, সেই কাজের জন্য ফিজি ভিসা আবেদন করুন। এছাড়াও, ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে চাইলে কাজের দক্ষতার প্রমাণপত্র দিতে হবে।
ফিজিতে চাহিদা বেশি এমন কিছু কাজ হচ্ছে –
- কৃষি
- গার্মেন্টস
- ড্রাইভিং
- পেইন্টিং
- মেকানিক্যাল
- হোটেল বয়
- কনস্ট্রাকশন
- ওয়েল্ডিং
- ক্লিনিং
- ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি।
উপরোক্ত কাজগুলোর উপর ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ভিসা করে ফিজি যেতে পারলে ভালো বেতনে কাজ করতে পারবেন।
ফিজি কাজের বেতন কত
ফিজি কাজের বেতন হচ্ছে প্রতি ঘণ্টায় সর্বনিম্ন ৪ ফিজিয়ান ডলার। ফিজিতে এক মাসে ৮০০ থেকে ১০০০ ফিজিয়ান ডলার ইনকাম করা সম্ভব। এক মাস ফিজিতে কাজ করে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফিজিতে প্রায় সকল কাজের চাহিদা অনেক বেশি। তাই, আপনি যদি ফিজি যেতে পারেন, তবে যেকোনো কাজ করেই অনায়াসে প্রতি মাসে বাংলাদেশি টাকায় ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে ফিজি যাওয়া গার্মেন্টস কর্মীরা প্রতি মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা ইনকাম করে থাকে। ক্লিনার এবং কৃষি ভিসায় ফিজি যাওয়া কর্মীরা প্রতি মাসে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করে থাকে। এছাড়াও, মেকানিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কাজে যাওয়া কর্মীরা প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকার বেশি ইনকাম করে থাকে।
আরও পড়ুন – অনলাইনে ইতালি ভিসা চেক করার নিয়ম
আপনি যদি ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে পারেন, তাহলে প্রতি মাসে অনায়াসে ৪০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। তবে, কাজের উপর যদি আপনার দক্ষতা থাকে, তবে এই বেতনের থেকেও বেশি ইনকাম করতে পারবেন।
FAQ
ফিজি যেতে কত টাকা লাগে?
ফিজি যেতে ভিসা প্রসেসিং ফি, প্লেন টিকেট এবং আনুসাঙ্গিক খরচ সহ ২ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ টাকা লেগে থাকে। তবে, কোনো ভিসা এজেন্সি বা দালালের সহযোগিতা নিলে ৫-৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে।
ফিজি ভিসা প্রসেসিং হতে কতদিন লাগে?
ফিজি ভিসা প্রসেসিং হতে ৭ দিন থেকে ১ মাস সময় লেগে থাকে। তবে, ব্যতিক্রম হলে এর থেকেও বেশি সময় লাগতে পারে।
ফিজিয়ান ডলার রেট কত বাংলাদেশে?
ফিজিয়ান ডলার রেট বাংলাদেশে ৪৩.৮৩ টাকা। ফিজিয়ান ১ ডলার বাংলাদেশের ৪৩.৮৩ টাকা।
ফিজি কাজের বেতন কত টাকা?
ফিজি কাজের জন্য প্রতি মাসে বাংলাদেশি ৪০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফিজি যেতে কি কি লাগে?
ফিজি যেতে চাইলে ওয়ার্ক পারমিট, ৬ মাস মেয়াদি পাসপোর্ট, ২ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি, কাজের দক্ষতার প্রমাণ, জাতীয় পরিচয় পত্র সহ আরও কিছু ডকুমেন্ট লাগে।
শেষ কথা
এই পোস্টে আপনাদের সাথে ফিজি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নেয়ার পদ্ধতি এবং কীভাবে ফিজি ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়াও, ফিজি যেতে কি কি লাগে এবং ফিজি যেতে কত টাকা লাগে তা নিয়েও আলোচনা করেছি।
I am electrician Qatar working 4 years now live in Bangladesh.I am your company good employed
Who do I contact if I want to go to Fiji? You can say a little.