নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে বিস্তারিত জেনে নিন

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এটা অনেকেই জানতে চান। ভোটার হওয়ার পর অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। তাই, ১৮ বছর বয়স পেরলেই সবার মাঝে ভোটার হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান, তবে কি কি কাগজ লাগবে তা জানতে পারবেন এই পোস্টে।

পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে নতুন ভোটার হতে কতদিন সময় লাগে এবং ভোটার আইডি কার্ড করতে কত টাকা লাগে এসব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে

নতুন ভোটার হতে জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি, নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট, পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, বিদ্যুৎ বিলের কপি, কর পরিশোধের কপি, রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট এবং বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট লাগে। এছাড়াও, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর নাম্বার সংযুক্ত করতে পারেন।

নতুন ভোটার হতে চাইলে ভোটার আবেদন করার সময় এসব ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। নতুন ভোটার হতে কি কি কাগজ লাগে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি।

• জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি
• নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট
• পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
• বিদ্যুৎ বিলের কপি
• রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট
• বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
• অঙ্গিকারনামা
• খাজনা বা ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ

উপরের তালিকায় উল্লিখিত এসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে যখন আপনি জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে যাবেন। সরকারী ভাবে এনআইডি কার্ড এর আবেদন শুরু হলে কিংবা আপনি নিজে থেকে অনলাইনে আবেদন করতে চাইলে, এসব তথ্য অবশ্যই প্রয়োজন হবে।

তাই, নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে তা উপরের তালিকা থেকে দেখে আবেদন করুন।

ভোটার আবেদন করার পূর্বশর্ত

ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে অবশ্যই কিছু পূর্বশর্ত মানতে হবে। নয়তো, আপনার ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন মঞ্জুর হবে না এবং আপনি জাতীয় পরিচয় পত্র পাবেন না। নতুন ভোটার হওয়ার শর্তগুলো হচ্ছে –

1. জন্মসুত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
2. ১৬ বছর বয়স কিংবা এর বেশি হতে হবে।
3. পূর্বে কখনো ভোটার নিবন্ধন করেননি।

আপনি যে একজন বাংলাদেশের নাগরিক এবং আপনার বয়স ১৬ বছর কিংবা এর বেশি, এসব যাচাই করার জন্য আপনার জন্ম সনদের অনলাইন কপি, পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের কপি, বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট, বাড়ির কর পরিশোধের ইত্যাদি জমা দিতে হবে।

এসব তথ্য দিয়ে আপনার আবেদনের সকল তথ্য যাচাই করা হবে। যদি আপনি উপরে উল্লিখিত ভোটার হওয়ার পূর্বশর্তগুলি মেনে আবেদন করে থাকেন, তবে ভোটার আইডি কার্ড পেয়ে যাবেন।

ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে

ভোটার আইডি কার্ড করতে জন্ম নিবন্ধন সনদ, বিদ্যুৎ বিলের কপি, বাবা-মায়ের আইডি কার্ডের ফটোকপি, পরিক্ষার সার্টিফিকেট, বাসার করের কপি, নাগরিকত্ব সনদ, ব্লাড টেস্ট রিপোর্ট প্রয়োজন হবে। এসব তথ্য দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে তা নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন। নতুন ভোটার হতে যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে, সেগুলো নিয়ে নিচে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করেছি, পড়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন।

জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি

ভোটার হওয়ার পূর্বে আমাদের সকলের বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় বহন করে আমাদের জন্ম সনদ। জন্ম সনদের কারণে আমরা নিজেদেরকে বাংলাদেশি প্রমাণ করতে পারি। এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার সময় আপনাকে জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি জমা দিতে হবে।

অনলাইন জন্ম নিবন্দন সনদ না থাকলে, নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করুন পোস্টটি পড়তে পারেন। জন্ম সনদের তথ্য দ্বারা আপনার আবেদনের তথ্য যাচাই করা হবে। অন্নান্ন্য তথ্য ঠিক থাকলে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন সফল হবে।

নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট

আপনি যে বাংলাদেশের নাগরিক, সেটি প্রমাণ করার জন্য নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। এই সনদ যদি আপনার কাছে না থাকে, তবে ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশন থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।

আমরা যে বাংলাদেশের নাগরিক সেটি প্রমাণ করতে এই নাগরিকত্ব সনদটি প্রয়োজন হবে। অবশ্যই এই ডকুমেন্টটি আবেদন করার পূর্বে সংগ্রহ করে রাখবেন।

পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি

ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে বাবা-মায়ের আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে। আপনি যে তাদের সন্তান এবং জন্মগত ভাবে একজন বাংলাদেশি, সেটি প্রমাণ করার জন্য এসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে।

পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দেয়া বাধ্যতামূলক।

বিদ্যুৎ বিলের কপি

আপনার বাসার বিদ্যুৎ বিল বা ইউটিলিটি বিলের কপি আবেদন করার সময় জমা দিতে হবে। আপনার বাসায় নিশ্চয়ই বিদ্যুৎ রয়েছে। যেকোনো এক মাসের বিলের কপি আবেদন করার সময় জমা দিতে হবে। নয়তো, আবেদন গ্রহণ করবে না।

রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট

এনআইডি কার্ডে ব্লাড গ্রুপ যুক্ত করতে হয়। তাই, আপনার রক্তের গ্রুপ কী সেটার একটি রিপোর্ট জমা দিতে হবে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার জন্য। আপনার রক্তের গ্রুপ এনআইডি কার্ডের পিছন দেয়া হবে যা আপনি নিবন্ধন শেষ হোক।

বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট এর ফটোকপি

বোর্ড পরিক্ষা (JSC/SSC/HSC) দিয়ে থাকলে, এসব পরিক্ষার সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। তবে, পরিক্ষার সার্টিফিকেট এর মূল কপি নয়, ফটোকপি জমা দিতে হবে। আপনার সার্টিফিকেট এর তথ্য, আবেদনের তথ্য, পিতা-মাতার তথ্য ইত্যাদি দিয়ে আবেদন যাচাই করা হবে।

তাই, আবেদনের সঙ্গে বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট এর ফটোকপি জমা দিতে হবে। এছাড়া, বিবাহিত হলে বৈবাহিক সম্পর্কের তথ্য আবেদনে উল্লেখ করে দিতে হবে। বিবাহিত হলে অবশ্যই বিবাহিত দিতে হবে।

অঙ্গিকারনামা

বাংলাদেশের সাধারণ জনগন এর জন্য অঙ্গিকারনামা জমা দিতে হবে না। যারা প্রবাসে ছিলেন এবং আইডি কার্ড নেই, তারা অঙ্গিকারনামা জমা দেয়ার পর জাতীয় পরিচয় পত্র পেয়ে যাবেন। কিংবা, যারা বিভিন্ন সমস্যার কারণে সঠিক সময়ে এনআইডি কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারেননি তাদেরকে অবশ্যই অঙ্গিকারনামা জমা দিতে হবে।

আবেদন করার পর এসব তথ্য সংযুক্ত করতে হবে। নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে বিস্তারিত জেনে গেছেন আশা করছি।

খাজনা বা ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ

বাসা-বাড়ির খাজনা বা ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ জমা দিতে হবে এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার সময়। আপনার পিতা/মাতা বা অভিভাবকের নামে খাজনা পরিশোধের রশিদ হলেও সমস্যা নেই। তবে, বাধ্যতামূলক জমা দিতেই হবে। নয়তো, জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এসব বিষয় শেয়ার করেছি। উপরে উল্লিখিত প্রতিটি ডকুমেন্ট এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে প্রয়োজন হবে। একটিও যদি মিস করেন, তবে আবেদন করতে পারবেন না

জাতীয় পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধন, ভূমি সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধান জানতে নিচের পোস্টগুলো পড়ুন।

এনআইডি কার্ড সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য –