অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় পত্র পাবেন। অর্থাৎ, আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি হয় এবং এনআইডি কার্ড না থাকে, তবে অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করলে আপনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র পেয়ে যাবেন।
ভোটার আইডি কার্ড হওয়ার আগে অব্দি আমাদের সবার একজন বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় বহন করে আমাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ। কিন্তু, দেশের অনেক সুবিধা গ্রহণ করতে হলে আমাদের এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়।
কয়েক বছর পর পর সরকারীভাবে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন শুরু হয় বলে, অনেক দিন যাবত জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু, আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে এমন কিছু পদ্ধতি আলোচনা করবো, এগুলো অনুসরণ করে আপনি নিজেই ঘরে বসে অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন ফরম কীভাবে পূরণ করতে হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
এক নজরে পোস্টের বিষয়বস্তু
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য শর্ত
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আমাদের অবশ্যই কিছু শর্ত মানতে হবে। এসব শর্ত মেনে তবেই নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন পত্র পূরণ করতে পারবো। এসব শর্ত হচ্ছে,
- বয়স ১৬ বছর বা এর বেশি হতে হবে।
- জন্মগতভাবে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- পূর্বে কখনো এনআইডি এর জন্য নিবন্ধন করা হয়নি।
উপরোক্ত এই তিনটি শর্ত মেনে তবেই আমরা অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আবেদন পত্র পূরণ করে জমা দিয়ে আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবো। জাতীয় পরিচয় পত্র নেই কিংবা পূর্বে কখনো জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করেননি এবং বয়স যদি ১৬ বছরের বেশি হয় ও আপনি একজন বাংলাদেশি হয়ে থাকেন, তবেই এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কিছু তথ্য বা ডকুমেন্ট প্রয়োজন। এসব ডকুমেন্ট দিয়ে অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে হয়। কী কী ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য তা নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি।
- জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি
- নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট
- পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- বিদ্যুৎ বিলের কপি
- রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট
- বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট এর ফটোকপি
- অঙ্গিকারনামা
- খাজনা বা ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ
এই তালিকায় যেসব ডকুমেন্ট বা তথ্যের কথা উল্লেখ করা আছে, সেগুলো প্রয়োজন হবে যখন আপনি নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে যাবেন। তো চলুন, এখন নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করা যাক।
নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশে একজন নাগরিক হিসেবে জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়া এবং ভোটার হওয়ার দুইটি পদ্ধতি রয়েছে। এই দুইটি পদ্ধতির যেকোনো একটি অনুসরণ করে আপনি ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। এই পদ্ধতি দুইটি হচ্ছে –
- বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে এবং
- বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইট থেকে
নতুন ভোটার হওয়া এবং ভোটার আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি ৫ বছর পর পর ভোটার আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং ছবি তুলে সবাইকে ভোটার আইডি কার্ড প্রদান করা হয়। কিন্তু, অনেকেই এই ৫ বছর অপেক্ষা করতে চান না। কারণ, অনেক সময় আমাদের সকলেরই এনআইডি কার্ডের অনেক প্রয়োজন হয়।
আপনার যদি এমন প্রয়োজনে এনআইডি কার্ড দরকার হয়, তবে উপরোক্ত দুইটি পদ্ধতি অনুসরণ করে এনআইডি কার্ডের আবেদন ফরম পূরণ করে এনআইডি কার্ডের অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারেন। তো চলুন, এই পদ্ধতি দুইটি সম্পর্কে আরও বিস্তারি জেনে নেয়া যাক।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার নিয়ম
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। এরপর, আবেদন করুন বাটনে ক্লিক করবেন। অতঃপর, আপনার নাম, জন্ম তারিখ লিখুন এবং ক্যাপচা কোড পূরণ করে সাবমিট করে অন্যান্য তথ্য দিয়ে আবেদন করুন।
আরও বিস্তারিত জানতে নিচে উল্লিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
ধাপ ১ – অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন
প্রথমেই ভিজিট করুন services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে। এরপর, আবেদন করুন বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর, পুরো নাম (ইংরেজিতে) লিখুন, জন্ম তারিখ – দিন-মাস-বছর অনুযায়ী লিখুন এবং ছবিতে থাকা ক্যাপচা কোড দেখে নিচের বক্সে লিখুন এবং বহাল বাটনে ক্লিক করুন।
অতঃপর, অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করার জন্য আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিয়ে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করতে হবে।
আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বারে একটি ম্যাসেজ আসবে। যেখানে আপনার দেয়া তথ্য থাকবে এবং একটি ওটিপি কোড থাকবে। এই কোডটি ফাঁকা বক্সে লিখুন এবং বহাল বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর, একটি ইউনিক ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং বহাল বাটনে ক্লিক করুন।
সব ঠিক থাকলে আপনার এনআইডি একাউন্টে লগইন হয়ে যাবে। লগইন হলে নিচের ইমেজের মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন। এরপর, বিস্তারিত প্রোফাইল বাটনে ক্লিক করুন।
এখন, এডিট বাটনে ক্লিক করুন এবং ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা নির্বাচন করে দিন।
সকল তথ্য এডিট করবেন এবং ডকুমেন্ট আপলোড করবেন। অতঃপর, তথ্য এবং ডকুমেন্ট নিশ্চিত করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে আবেদন সাবমিট করে দিবেন।
এই পদ্ধতি অনুসরণ করে অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন। আবেদন অনুমোদিত হয়ে গেলে আইডি কার্ড সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
FAQ
অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করবো কীভাবে?
services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আবেদন করুন বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনার সকল তথ্য দিয়ে অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভোটার হওয়ার জন্য কি কি লাগে?
ভোটার হওয়ার জন্য বোর্ড পরিক্ষা সার্টিফিকেট, নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট, ব্লাড টেস্ট রিপোর্ট, ইউটিলিটি বিল এর কপি লাগবে।
ছবি তোলার কতদিন পর অনলাইন কপি পাওয়া যায়?
ছবি তোলার ৩০-৪৫ দিনের মাঝেই অনলাইনে এনআইডি কার্ডের কপি পাওয়া যায়।
আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি, এই পোস্টে উল্লিখিত সকল নিয়ম অনুসরণ করে ভোটার হওয়ার আবেদনের ফরম পূরণ করতে পেরেছেন। এমন আরও তথ্য জানতে নিচের পোস্টগুলো পড়তে পারেন।
এনআইডি কার্ড সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য –
আইডি কার্ড বের করতে চাইলে | আইডি কার্ড বের করার নিয়ম |
ভোটার আইডি ডাউনলোড করতে | ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড |
স্মার্ট কার্ড চেক করার উপায় | স্মার্ট কার্ড চেক |
ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে | ভোটার আইডি কার্ড চেক |
ফরম নাম্বার দিয়ে এনআইডি বের করুন | ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড |
ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেছে | ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করণীয় |
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চান | ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে |
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি | ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে |
হোমপেজ | NID Check |
ক্যাটাগরি | NID Card |
Nhhk
আমি কি অনলাইনে সব কাজ করতে পারি আর আমাকে সাহায্য করতে আমার বিভাগ বা জেলার কোনো লোক আছে এই দায়িত্ব
আপনি কী কাজ করার কথা বলছেন?